Poem

তোমার ভালো মন্দ


প্রিয় তুমি কেমন আছো? 

জানি তুমি ভালো নেই।

বিষময় চতুর্দিক।

দগ্ধ, অভিতপ্ত, রক্তাক্ত, ক্ষয়িত।

ঘন অন্ধকারে আচ্ছন্ন,

তমসাবৃত তোমার আত্মা।

 যেন এক দুর্বহ দাহনভার বইছে ক্রমাগত।

 দুর্বার ক্রোধ, এই আক্রোশ, এই শোণিত ক্ষয় হয়তো আমাদের জন্যই।

হাজার বছর ধরে সমস্ত সৃষ্টির সমস্ত আদিমতার সমস্ত অস্তিত্বের গায়ে দাগ দিয়েছি এতদিন আমরাই।

কিছু পাপ তোমার,কিছু আমার

বহনও উভয়ই

এর দায়ভারও আমাদেরই।

আমরা এখন আনখশির এই বিষাক্ত ভয়ের অধীনে।

পরাজিত। বিভ্রান্ত। নির্জিত। বিপর্যস্ত।
এবার কার পালা?

জানি না?

শুধু জানি, সারাদিন কৃষ্ণপক্ষের রাতের মতো নিঝুম শীতল এক মরণস্পর্শ এখন যেন আমাদের শরীর জুড়ে থাকে।

আমাদের প্রতিটা অণু-পরমাণুতে,

প্রতিটা রক্তকণিকায়,

অপেক্ষায় প্রহর গোনা এখন।

#galibsjournal

বেলা শেষের খেলা

খেলা শেষে কর্দমাক্ত হয়ে বাড়ি ফেরা,  

ঘর্মাক্ত দেহে খেলা শেষে বিছানায় মোড় ঘোরা, কত না খেলা?

আর এই-

খেলা না ফুরোতেই শেষের বাঁশি বাজান অদৃশ্য রেফারি,

বিনা প্রস্তুতিতে দান ছেড়ে উঠে পড়তে হয় খেলোয়াড় কে,

 বিদায়কালে ‘যাই’-এর উত্তরে বৃদ্ধা পিতামহীর মত কাঁপাস্বরে বলা, ‘যাওন নাই ভাই?

বলো “আসি গিয়া” -শোনার অবকাশটুকুও মেলে না।

খাঁ খাঁ করা প্রান্তরে অযত্নে পড়ে থাকে ফেলে যাওয়া দাবার গুটি,

একলা রঙ্গিন পুতুল! রং চটা ফুটবল। শখের নাটাই সুতো । আর এক মুঠো দীঘশ্বাস।

বিষাদের কণা চুঁইয়ে চুঁইয়ে জমা হয় খেলাঘরের আকাশে-বাতাসে।

বিচ্ছেদের ব্যথা, উচ্ছাসের কথা মালা আর অনিশ্চয়তার চাপা আশঙ্কাগুলো

আর ফুলের দস্তাঁন থেকে ঝরা পড়া শুকনো পাতা থমথমে করে রাখে খেলাঘরটিকে।

ওই যে ‘যদি’-টাকে দুর্বল দ্বিধা ভেবে অবহেলা করেছি, সেটাই একমাত্র সত্যি হয়ে ওঠে জীবনে!

খেলা থেমে যায় অসময়ে,

রেখে যায় অপার শূন্যতা,

হাড়-হিম অনিশ্চয়তা।

কাল থাকবে তো সবকিছু, যা ঘিরে আছে আজ?

 ঠিক এ ভাবেই থাকবে তো?

 বাস্তবে থামুক না থামুক, এই শীতল আতঙ্কই তো আসলে আরেক নাম, খেলা থেমে যাওয়ার!

ভেঙে পড়তে পড়তেও তবু মায়াজল টলটল করে বুকের ভেতর।

খেলা থেমে যাওয়ার এ বিপজ্জনক খেলা ঘিরে ধরে বলেই.

 আরও তীব্র সংরাগে জীবনকে জড়িয়ে নিতে মন চায়।

আহা! কি মায়া! কি মায়া!

মানুষের নির্ভেজাল বজ্জাতির তুঙ্গ দেখা হলো,

দেখা হলো তার অসহায়তা, নিরাপত্তাহীনতা,

পাশাপাশি নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়া মানুষও যে কত দেখলাম,

তাই বা কম কী!

অতি-ইচ্ছার ডানা ছেঁটে সময়ের মাপমতো করে নেওয়া যে আমি-র সঙ্গে আলাপ হলো,

সেও তো প্রত্যাশার অতীত!

অর্থহীন কোলাহল পেরিয়ে সময় হলো,

গহন নীরবতার।

তীব্র হননেচ্ছা আর খুচরো প্রতিশোধ যা বাকি রইল,

শুধু সেটুকুর জন্যও তো নতুন খেলা শুরুর প্রতীক্ষা করা যায়!

মানুষই তো একমাত্র প্রজাতি যে ঘৃণায় জর্জরিত হয়েও অবচেতনেও শত্রুর মৃত্যু নয়, পরাজয়ই চায়।

চকিতে খেলা থেমে যাওয়ার এই অভিশপ্ত নিও-নর্মাল নয়, জমাটি খেলার শেষে সে জিততে চায়, কখনও কখনও হারতেও।

2

ছেলেটির খেলা থেমে গেছে ভোর রাতে।

 তার প্রিয়জনেরা হয়তো খবর পাননি এখনও।

আত্মহত্যা না দুর্ঘটনা, তাও নিশ্চিত নয়।

তবু নতুন খেলা শুরু হয়েছে তাকে ঘিরেই।

তার পরিচয় ও মৃত্যুর পটভূমি পালটে পাল্টে যাচ্ছে মুহূর্মুহূ।

একটি ভিড় একটি মৃত্যুকে নিয়ে খেলছে।
একদিন যদি খেলা থেমে যায়, নতুন খেলা শুরু হয়।

#galibsjournal

সীমান্ত

তোমরা শুধু একটা তারকাঁটা’ই দিলে সীমান্তে

না দিতে পারলে বাধা মনে, না হৃদয়ে

না ভাষায়, না জবানে, না ধর্মে

না জীবনে, না মরণে

একই চাঁদ আমরা দেখি,

একই জোসনায় আমরা ভাসি

একই ভাষায় স্বপ্ন আমরা দেখি

শীতের কূয়াশায় ডুবে যাই

নতুন সূর্যে জেগে উঠি

শুধু একটা তারকাঁটা’ই দিলেই সীমান্তে।।

#galibsjournal

হিসেব-নিকেষ


কিছু স্বর কিছু ধ্বনি, কিছু সুর জানলার পাশে রাখা ছিল,

দরজা জুড়ে পড়েছিল কিছুটা দম্ভী বাতাস,

কখনওবা জ্যোৎস্নার কিছু চাঁদরেণু।

দেওয়াল জুড়ে এখন বাস করে শুধু শোকের মিছিল।

একেবারেই কি গেলো সব মায়ার বাঁধন ছেড়ে, ছিঁড়ে?

আরও গভীরে?

জানি একদিন সে স্থির হবে, শান্ত হবে, স্থিমিত হবে।

একদিন ঝড় থেমে যাবে। মৃত্যুর মিছিলে টান ধরবে।

একদিন সে আবার ছন্দে ফিরবে।

জীবনে ফিরবে।

একদিন সে নতজানু হবে আজন্ম পিপাসায় আবার।

কিন্তু সে ফেরা কি ফেরা হবে?

 নতুন করে সবটা গড়া সহজ নয়।

#galibsjournal

এলোমেলো পংক্তিমালা


সূর্য টা এখন মাথার উপর

বড্ড বেশী তাপ লাগে

এই তো সেদিন কলাভবনের বারান্দায়

তুমি বসে ছিলে সাথে-

তোমার কি মনে আছে?

আকাশ ভেঙ্গে সেদিন বৃষ্টি নেমে ছিলো

বৃষ্টির ছটা এসে বুঝি তোমায় ভিজিয়ে দিয়ে গেলো

আমি মুগ্ধ তা দেখে –

যেদিন আমরা সবাই মিলে বসতাম

সবাই মানে আমি, তুমি, শিশির,মিঠু, বাবলু,মৌসুমি, সার্লি বাকি নাম স্মৃতি ভ্রষ্ট—

জানো শালি এখন ‘নান’

সেদিন দেখা হয়ে ছিলো হলিক্রসের সামনে

তেমনি শান্ত, ফর্সা মেয়েটা-

রোদে পুড়ে পুড়ে জিগেস করলো তোমাদের সবার কথা

আমি বললাম কেন এমন হলো-

কিছু বললো না

শুধু কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো -

“আমি কি তা জানি”?

সূর্য টা এখন মাথার উপর

বড্ড বেশী তাপ লাগে

অথচ এই তপ্ত রোদে আমরা কতটা পথ হেটেছি

ঢাকা শহরটা ছিলো হাতের মুঠোয়

গোল্ড লীফের প্যাকেট টা বুকেই থাকতো

সেই বুকে এখন রিং চার’টা ক্ষত হয়ে রিনঝিন বাজে।

তখন সন্ধ্যা হলে আমাদের আলস্য কিছুটা কাটতো

এখন সন্ধ্যা নামে ভয়াল রুপে

এখন রাস্তায় এত বাতি –তবু ও পথ চলায় এত ভয়

এই বুঝি কি হয়?

যে আমি দিন রাএির হিসেব করিনি কোনদিন

সূর্য টা এখন মাথার উপর

বড্ড বেশী তাপ লাগে

কখন যেন রবি বাবু বের হয়ে আসে-

“ফুরায় বেলা, ফুরায় খেলা, সন্ধ্যা হয়ে আসে–

কাঁদে তখন আকুল-মন, কাঁপে তরাসে”।।

#galibsjournal

স্মৃতি


চলতি পথের টুকরা টাকরা স্মৃতিগুলো কুড়ো বার বড় শখ হয়-

হাতড়ে ফিরি-

খুজে মরি-

পথ কে ফেলে আসার স্মৃতি গুলো ও বড় মনে পড়ে

স্মৃতি স্মৃতিতে আাবার ও জট ও লেগে যায়

স্মৃতি ভ্রষ্ট হয়ে যাই কুড়োতে কুড়োতে

তুমি মানে আমি তুমি,সে, ও আরো জানি কে

দরোজায় দাড়িয়ে টোকা দেয়

ব্ড্ড ভাবায়

বড্ড কাঁদায়

কখন যেনো দীর্ঘশ্বাস হয়ে বেরিয়ে যায়

তুবুও বড় শখ হয় চলতি পথের টুকরো টাকরা স্মৃতি কুড়োবার

আছে নাকি তোমার কাছে আমার জন্য কোন টুকড়ো টাকরা স্মৃতি?

স্মৃতি ভ্রষ্ট আমি!!

#galibsjournal

একদিন বিউটি বোর্ডিং এ রবি বাবুর সাথে


কি যে বৃষ্টি! ছিলো সেদিন, থেমে থেমে সকাল থেকেই

এরই মাঝে কাফকা’র দ্য মেটামরফোসিস' বই’টা খুজছিলাম

সারা সকাল ধরে বৃষ্টি গুলো মাথায় নিয়েই

তো বাংলাবাজার ঘুরে ঘুরে বরাবররে মতই

বই’র গন্ধে মাতোয়ারা আমি,

দুপুরে এসে বেশ ক্লান্ত লাগলো দেহমনে

এদিকে ক্ষুদায় বেশ কাহিল ও লাগছিলো

কি করি? কি করি?

এই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কোথায় যাই?

যদি ও বন্ধুবর মেহবুব বারবার বলেছিলো

এসে পড়িস আমার পদ্মনিধি লেনের বাসায়

আমি কিন্তু তোর জন্য অপেক্ষা করবো।

করগে যা! কেউ তো আর এখন অপেক্ষা করে না?

তুই না হয় করলি খানিকটা ! হঠাৎ করে মনে হলো

আরে আমি তো শিরিশ দাস লেন এ দাড়িয়ে

যেই না নাকে এলো সর্ষে ইলিশের ঘ্রাণ টা

আর কি দেরি সয় প্রাণে একেবারে সোজা

জমিদার সুধীর চন্দ্র দাসের হলুদ বাড়িটার সামনে!

আহা! বাড়ীটা’র আর প্রাণ নেই?

তাতে কি? আমার মনের প্রাণের কমতি কই?

বিউটি বোর্ডিং এ এই বৃষ্টি মাথায় করে কেউ নেই

শুধু আমি আর আমার সামনের টেবিলে শুভ্র কেশের এক বৃদ্ধ বসে

হতবিহ্বল হয় বসতেই হলো আমার মুখোমুখি

চোখাচোখি মৃদু হাসিতেই খাওয়া শেষ করলাম দুজন’ই

বাইরে বৃষ্টি বুঝি কমে আকাশ কিছু ফর্সা হলো

তাতে কি আর বিউটি বোর্ডিং এ আলো হয় !

চমক যে তখন ও বাকি ছিলো, তা কে জানতো?

হঠাৎ করেই শুভ্র কেশের বৃদ্ধ টি দাড়িয়ে হেকে উঠলো

কেষ্ঠ চল’ বৃষ্টি তো কমে ছে রে, বলে আমার দিকে মূদু হেসে বেড়িয়ে গেলো?

এতক্ষণ খেয়ালই করেনি কেষ্ট’ যে দরজার পাশে বসে ঝিমোচ্ছিলো

কিংকর্তব্যবিমূঢ় আমি এক দৌড় বাইরে এসে দেখতে পেলাম কোথাও কেউ নেই

শুধু দূর আকাশ পানে মেঘের ফাকে দেখতে পেলাম এক খন্ড রবীন্দ্রনাথ কে!

#galibsjournal

নতুন যাএা মুসাফির

খুব প্রত্যুষে,

অনেক আগে কক্সবাজারে একবার সূর্য উদয়

দেখেছিলাম তোমার হাত ধরে,

সে সময়টা নাতো?

নাকি বেলা দ্বি-প্রহর?

পুরা মাস ভরা পূর্ণিমা'র চাঁদ’ টা

যখন থালার মত, ভাসিয়ে দেয় পৃথিবী,

পূর্ণ মাসের পোয়াতি’র মত চাঁদ টা কে

যখন একঝাঁক বক এসে ঢেকে দেয়,

তোমার মনে আছে গ্রাফিক্স আর্ট'স

কলেজের মাঠে বসে,

আমরা একবার একসাথে সেই অপূর্ব দৃশ্য দেখেছিলাম,

তোমার কোলে মাথা রেখে ।

সময় কি সেটা?

সময় হিসেব টা বড্ড গোলমেলে মিলে কি বলো?

আমার শেষ যাবার সময়-

অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে ইরানে’র 'কাশান' থেকে আনা

‘গোলাপ’ আতর টা কি দেবে কিছু আমার গায়ে ঢেলে!

তুমি তো জানো সেটা আমার

কত পছন্দের ছিলো?

কত কিছুই তো পছন্দের ছিলো!!

সব ফেলে চলে যেতে হবে তাই না!

কিছুই কি দেবে না সাথে?

কড়িডোরে লাগানো মানিপ্ল্যান্ট টা বড় সুন্দর হয়েছে

পাতাগুলো কেমন নাদুস-নুদুস,

রোজ সকালে পাতা গুলো কে আদর না দিলে

আমার দিন শুরু হতো না,

বড্ড ছুঁতে ইচ্ছে করছে।

কি কারবার সব জায়গা মতই আছে !!

বুক সেলফের বই’ গুলো মাঝে মাঝে ঝেরে রেখো।

আমার অনেক পছন্দের সাদা পান্জাবী গুলো

যেগুলো মাঝে মাঝে আমি ‘আব’ দিয়ে পড়তাম

বড় ভালো লাগতো! দিয়ে দিও যে চায়!

আজ ও আমার সাদা কাপড়ই পড়া

কিন্তু তোমরা কোন সেলাই দিলে না তাতে!!

না আমি কিছু মনে করেনি, মেনে নিয়েছি

না মেনে কি উপায় বলো?

ততক্ষণে আমি বুঝে গেছি

পৃথিবীর বুকে আমার ভূমিকা শেষ।

সবাই ভুলে যাবে একসময়ে

যে আমি নামে ‘কোন এক আমি’ ছিলাম একদিন।

আমি সকালে যে কোরআণ শরীফ ‘টা পড়তাম

মাঝে মাঝে তোমরা পড়ো,

যদি আমার কাছে তার কথা গুলো পৌছে,

আমি যে কান পেতে রবো।

তোমরা আমাকে রেখে চলে এসো না

আমার ‘অনন্ত যাএায়’-কিছু সময় থেকো,

আমি যে বড় একা হয়ে যাবো।

তুমি তো জানো –

আমি মানুষ ছাড়া এক মূহুর্ত থাকতে পারি না,

বন্ধুবৎসল মানুষ আমি ।

বন্ধুহীন চলে যেতে হচ্ছে!

মন খারাপ করা মেঘ জমলে আকাশে,

ঝুম বৃষ্টি নামলে কি আমার কাছে যাবে সেদিন?

আমি বৃষ্টিতে ভিজে যাবো,

গ্রীস্মের রোদে পুড়তে থাকবো,

আকন্ঠ পিপাসার্ত আমি তোমার অপেক্ষায় থাকবো!

তুমি কি একটু এসে ‘সূরা ইয়াসীন’ পড়ে

আমার পিপাসা সেদিন মেটাবে না?

সময়টা তে কি তুমি আমার হাতটা ধরে থাকবে?

তোমার মুক্তো দানা কি আমার হাত ছোবে তখন?

“লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” পড়তে

আমার শেষ বেলায় সাহায্য করো আমায়,

মিনতি আমার তোমার কাছে!!

শুইয়ে আমায় মাটিতে

মুখটা আমার খুলে দিও

আমার কাবার দিকে,

শুয়ে শুয়ে দেখি যেনো

আমার আল্লাহ- রাসুল কে।

প্রার্থনা

মধ্য '৫২ এক দারুণ সময়

কি আনন্দের, কি বিষাদের

কি ভাঙার,কি গড়ার

কি প্রেমের, কি বিরহের।।

কোন বাঁধা নেই,কোন মানা নেই,

কোন ভয় নেই তোমার হাত খানি ধরার।

কি চিৎকার করে বলে ওঠার

"লাঙল যার জমি তার"

গোর্কির মা'কে বড় ভালবাসি

কি তোমার মা'কে দেখে ও আনন্দে ভাসি,

এই মধ্য ৫২' তে

আমি এখন আকাশের ঠিকানাটাও জানি -জানো চিঠি দিলে ঠিকঠাক

পৌঁছে যায়, এ এক দারুণ অনূভুতি!!

চিৎকার করে বলি তোমাকে ভালোবাসি

আরো চিৎকার করে বলি তোমাকে ঘৃণা করি।।

তোমার হাতে এখন ও দিতে চাই

বর্ষায় ফোটা প্রথম ‘কদমফুল’

সাথে তোমার খোপায়

জড়াতে চাই হাইকোর্ট থেকে কেনা

বেলী ফুল!!

বড্ড রোমান্টিক?

আজব! প্রাণী –

মনটা যে অষ্ঠাদশে-ই ঘোরে

সিগারেটের শেষ টান টা দিয়ে ফিল্টার টা ষোল বছরের অভিমাণী কিশোরীর মিষ্টি ঠোঁট দুটো 'র মত একটা চুমু দিয়ে ফেলে দিতে চাই -যত দূরে পারি!

তুই কি জানিস এখনও আমি গুলিস্তানের কামানের সামনে তোর অপেক্ষায় মরি?

সবশেষে ক্লান্ত দেহে যখন বিছানায়- মাথাটা রাখি

ভয়টা হয় এই মধ্য '৫২ তে?

T20 ' র জন্য স্কোর ভালোই হয়তো বা

টেষ্টের জন্য শক্ত কোন স্কোর না!

কেন জানি না একটা পুরো ইনিংস

আমি খেলতে চাই - বড্ড লোভ হয় রে!

মাঝ রাতে ঘুম যখন ভাঙ্গে

তৃষার্ত আমি পানি পান করে আবার যখন শুতে যাই, কেবলই মনে হয় ফজরের আজান শুনবো তো আজ!

ঘুম কি ভাঙ্গবে আমার?

খোদা রাসুল আমার দয়াময় তোমার কলেমা নসিব হবে তো শেষসময়?

হিসেব-নিকেষ

কিছু স্বর কিছু ধ্বনি, কিছু সুর জানলার পাশে রাখা ছিল,

দরজা জুড়ে পড়েছিল কিছুটা দম্ভী বাতাস,

কখনও বা জ্যোৎস্নার কিছু চাঁদরেণু।

দেওয়াল জুড়ে এখন বাস করে শুধু শোকের মিছিল।

একেবারেই কি গেলো সব মায়ার বাঁধন ছেড়ে, ছিঁড়ে?

আরও গভীরে?

জানি একদিন সে স্থির হবে, শান্ত হবে, স্থিমিত হবে।

একদিন ঝড় থেমে যাবে। মৃত্যুর মিছিলে টান ধরবে।

একদিন সে আবার ছন্দে ফিরবে।

জীবনে ফিরবে।

একদিন সে নতজানু হবে আজন্ম পিপাসায় আবার।

কিন্তু সে ফেরা কি ফেরা হবে?

নতুন করে সবটা গড়া সহজ নয়।

বেলা শেষের খেলা !                         

খেলা শেষে কর্দমাক্ত হয়ে বাড়ি ফেরা,

ঘর্মাক্ত দেহে খেলা শেষে বিছানায় মোড় ঘোরা, কত না খেলা?

আর এই-

খেলা না ফুরোতেই শেষের বাঁশি বাজান অদৃশ্য রেফারি,

বিনা প্রস্তুতিতে দান ছেড়ে উঠে পড়তে হয় খেলোয়াড় কে,

বিদায়কালে ‘যাই’-এর উত্তরে বৃদ্ধা পিতামহীর মত কাঁপাস্বরে বলা, ‘যাওন নাই ভাই?

বলো “আসি গিয়া” -শোনার অবকাশটুকুও মেলে না

খাঁ খাঁ করা প্রান্তরে অযত্নে পড়ে থাকে ফেলে যাওয়া দাবার গুটি,

একলা রঙ্গিন পুতুল! রং চটা ফুটবলশখের নাটাই সুতো আর এক মুঠো দীঘশ্বাস

বিষাদের কণা চুঁইয়ে চুঁইয়ে জমা হয় খেলাঘরের আকাশে-বাতাসে

বিচ্ছেদের ব্যথা, উচ্ছাসের কথা মালা আর অনিশ্চয়তার চাপা আশঙ্কাগুলো,

আর ফুলের দস্তাঁন থেকে ঝরা পড়া শুকনো পাতা থমথমে করে রাখে খেলাঘরটিকে

ওই যে ‘যদি’-টাকে দুর্বল দ্বিধা ভেবে অবহেলা করেছি, সেটাই একমাত্র সত্যি হয়ে ওঠে জীবনে!

খেলা থেমে যায় অসময়ে,

রেখে যায় অপার শূন্যতা,

হাড়-হিম অনিশ্চয়তা

কাল থাকবে তো সবকিছু, যা ঘিরে আছে আজ?

ঠিক ভাবেই থাকবে তো?

বাস্তবে থামুক না থামুক, এই শীতল আতঙ্কই তো আসলে আরেক নাম, খেলা থেমে যাওয়ার!

ভেঙে পড়তে পড়তেও তবু মায়াজল টলটল করে বুকের ভেতর

খেলা থেমে যাওয়ার বিপজ্জনক খেলা ঘিরে ধরে বলেই.

আরও তীব্র সংরাগে জীবনকে জড়িয়ে নিতে মন চায়

আহা! কি মায়া! কি মায়া!

মানুষের নির্ভেজাল বজ্জাতির তুঙ্গ দেখা হলো,

দেখা হলো তার অসহায়তা, নিরাপত্তাহীনতা,

পাশাপাশি নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়া মানুষও যে কত দেখলাম,

তাই বা কম কী!

অতি-ইচ্ছার ডানা ছেঁটে সময়ের মাপমতো করে নেওয়া যে আমি-সঙ্গে আলাপ হলো,

সেও তো প্রত্যাশার অতীত!

অর্থহীন কোলাহল পেরিয়ে সময় হলো,

গহন নীরবতার

তীব্র হননেচ্ছা আর খুচরো প্রতিশোধ যা বাকি রইল,

শুধু সেটুকুর জন্যও তো নতুন খেলা শুরুর প্রতীক্ষা করা যায়!

মানুষই তো একমাত্র প্রজাতি যে ঘৃণায় জর্জরিত হয়েও অবচেতনেও শত্রুর মৃত্যু নয়, পরাজয়ই চায়

চকিতে খেলা থেমে যাওয়ার এই অভিশপ্ত নিও-নর্মাল নয়, জমাটি খেলার শেষে সে জিততে চায়, কখনও কখনও হারতেও

2

ছেলেটির খেলা থেমে গেছে ভোর রাতে

তার প্রিয়জনেরা হয়তো খবর পাননি এখনও

আত্মহত্যা না দুর্ঘটনা, তাও নিশ্চিত নয়

তবু নতুন খেলা শুরু হয়েছে তাকে ঘিরেই

তার পরিচয় মৃত্যুর পটভূমি পালটে পাল্টে যাচ্ছে মুহূর্মুহূ

একটি ভিড় একটি মৃত্যুকে নিয়ে খেলছে
একদিন যদি খেলা থেমে যায়, নতুন খেলা শুরু হয়